শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৯:২৪ অপরাহ্ন

বগুড়ায় পুলিশ সদস্য বিয়ের প্রবল দেখিয়ে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ।

বগুড়া শেরপুর  প্রতিনিধি : শেরপুর থানার এসআই মিথুন সরকার নামের এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে এমন এক ধর্ষণের অভিযোগের তুলে তার বিরুদ্ধে বগুড়া জজ কোটে মামলা করেছেন এক কলেজ ছাত্রী।

জানা যায়,পুলিশের সাহায্য প্রার্থী সেই কলেজছাত্রীর মুঠোফোন নম্বর কৌশলে সংগ্রহ করে কথপোকথনের মাধ্যমে  তার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন এসআই মিথুন। এরপরই নিজের ধর্মীয় পরিচয় গোপন রেখে ওই মেয়েকে দেন প্রেমের প্রস্তাব। মেয়েটিও হন রাজি। এর কিছুদিন পরেই বেরিয়ে আসে এসআই মিথুনের ভয়ঙ্কর রুপ।  বিয়ের প্রবল দেখিয়ে করেন ধর্ষণ। পরে বিয়ের কথা উঠলে এসআই মিথুন শুরু করেন নানা তালবাহানা,বিয়ে না করার অনেক অযুহাত। অবশেষে মিথুনের নামে সেই ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রী ১৭-০৮-২০২৩ ইং (বৃহস্পতিবার)  তারিখে বগুড়ার আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ মামলা করেন।
ভুক্তভোগী সেই ছাত্রীর বয়স ২৩ বছর  তিনি শেরপুর উপজেলার বাসিন্দা। তিনি ঢাকার এক বেসরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

অন্যদিকে অভিযুক্ত এসআই মিথুনের বয়স  ২৮ বছর।তিনি শেরপুর জেলার সদর উপজেলার বয়রা পালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম সুনীল সরকার।
তিনি বগুড়ার শেরপুর থানায় কর্মরত থাকাকালীন ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেন সেই কলেজ ছাত্রীকে।

জানা গিয়েছে, বর্তমান  এসআই মিথুন বগুড়ার পুলিশ লাইন্সে কর্মরত রয়েছেন। তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।
ভুক্তভোগী জানান, এসআই মিথুন  অনেকবার মেয়েটির সঙ্গে আপোষের চেষ্টা করেছেন। এতে ব্যর্থ হন তিনি। অন্যদিকে মিথুনকে বারবার  বিয়ে করতে বললে তিনি রাজি না হওয়ায় অবশেষে তার বিরুদ্ধে আদালতে  মামলা করলেন ভুক্তভোগী সেই কলেজছাত্রী।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, মেয়েটির এর আগে বিয়ে হয়েছিল। মাস তিনেক সংসার করার পর ২০২০ সালে তার সেই দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটে। কিন্তু এরপরেও সাবেক স্বামীর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার ঝামেলা চলছিল। এসব সমাধানের জন্য পুলিশ সুপারের সাহায্য পেতে চেষ্টা করছিলেন তিনি। ওই সময় এসআই মিথুন বিষয়টি জানতে পেরে মেয়েটির মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করেন। পরবর্তী মেয়েটির সঙ্গে যোগাযোগ করে এক পর্যায়ে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন মিথুন। তবে মিথুন সনাতন ধর্মাবলম্বী হলেও তা গোপন রাখেন।

গত ৩ জুন দুপুরে শেরপুর উপজেলার ধুনট মোড়ে মেয়েটির সঙ্গে দেখা করেন মিথুন। ওই দিন বিকেলেই বিয়ের প্রলোভন দিয়ে উপজেলার খন্দকার টোলা এলাকার এক বাসাতে নিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন তিনি। পরবর্তীতে গত ২৭ জুন মেয়েটি শেরপুর থানায় মিথুনের খোঁজ করতে যান। তখনই তিনি জানতে পারেন মিথুন মুসলিম নন। বিষয়টি নিয়ে মিথুনের সঙ্গে তার কথা হয়। ওই সময় মিথুন তাকে জানান ধর্মীয় পরিচয় জানালে হয়ত তাদের সম্পর্ক হত না। একারণে তা গোপন করেন তিনি। তখনও মিথুন বলেন আমরা তো বিয়েই করছি। ধর্মীয় পরিচয় কোনো বিষয় না। মেয়েটিও সবকিছু মেনে নেন। কিন্তু এরপরেই ঘটে বিপত্তি। বিয়ের কথা এলেই তালবাহানা শুরু করেন মিথুন। এরমধ্যে লোকজন দিয়ে আপোষের চেষ্টাও চালান এসআই মিথুন। অবশেষে মিথুনের প্রতারণার বিষয় বুঝতে পেরে গত ১৪ আগস্ট শেরপুর থানায় ধর্ষণ মামলা করতে যান মেয়েটি। থানা মামলা না নেওয়ায় অবশেষে আদালতে মামলা করলেন তিনি।

অন্যদিকে মুঠোফোনের মাধ্যমে  অভিযোগের বিষয়টি  এসআই মিথুনের কাছে জানতে চাইলে, তিনি অস্বীকার করে বলেন, এসব অসত্য, মিথ্যা। আমাকে ফাঁসানোর জন্য এ মামলা করা হয়েছে।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়েটির আইনজীবি লুৎফর রহমান বলেন, মেয়েটির করা মামলাটি আদালত আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335